আপনার শিশু কি ঠিকমতো খেতে পারে না? সারাদিন খিটমিট করে? কোনোকিছুতেই যেন তেমন একটা আগ্রহ নেই–ক্লান্তি আর অবসাদে ভুগছে?
ওজন মোটামুটি ভালোই আছে তারপরও কি এই সমস্যাগুলোয় ভুগছে? এই সমস্যাগুলো এখন প্রায় কমবেশি সব শিশুদের মধ্যেই দেখা যায়।
এগুলো মূলত শিশুর অপুষ্টির লক্ষণ। চলুন আজকে তাহলে আমরা জেনে নিই কীভাবে শিশুদের এই অপুষ্টিতে ভোগা প্রতিরোধ করা যায়:
শিশুদের ক্ষেত্রে অপুষ্টি কী?
অপুষ্টি হলো এমন একটা অবস্থা যেখানে আপনার শিশু তার শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর বিকাশে সহায়ক প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ
সুষম খাবার গ্রহণ করে না। পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে শিশুর শারীরিক ও আচরণগত বিভিন্ন প্রকার জটিল রোগ দেখা যায়।
শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির লক্ষণ ও উপসর্গ:
- ক্লান্তি ও অবসাদ
- খিটখিটে স্বভাব
- মনোযোগহীনতা
- শুষ্ক ও খসখসে ত্বক
- মাড়িতে রক্তপাত
- ক্ষুধামান্দ্য
- কম শারীরিক বৃদ্ধি বা একদমই বৃদ্ধি থেমে যাওয়া
- ফুলে যাওয়া পেট
- ধীর আচরণ ও ধীর বুদ্ধিগত বিকাশ
- হজমজনিত সমস্যা
- পেশির ভর হ্রাস
- ক্রমশ ওজন কমতে থাকে
অপুষ্টি প্রতিরোধে খাবার:
অপুষ্টি রোধ করতে আপনার শিশুকে–
- প্রত্যেক ঋতু বা মৌসুম ভিত্তিক ফল ও সবজি খাওয়াতে হবে।
- ফল ও শাকসবজি প্রতিদিন কমপক্ষে দুই বার খাওয়াতে হবে।
- দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য যেমন ক্ষীর, পায়েস বা দুধের তৈরি সেমাই খাওয়ানো যেতে পারে।
- ভাত, রুটি, আলু মানে শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে।
- ডিম, মাছ, মসুর ডালের মতো প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করাতে হবে। প্রতিদিন দেড় লিটারের বেশি পানি পান করাতে হবে।
- প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় তেল, চর্বি ও বাদাম জাতীয় খাবার রাখতে হবে।
আর খেয়াল রাখতে হবে; শিশুকে কখনই জোর করে ভয় দেখিয়ে খাওয়ানো যাবে না। এছাড়াও শিশুদের অপুষ্টি প্রতিরোধের অংশ হিসেবে প্রতিটি পরিবারকে
স্বাস্থ্যকর ও শিশুবান্ধব পুষ্টি সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। শিশুর জন্মের পর প্রথম ছয় মাস বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। এটি সর্বোত্তম বৃদ্ধি এবং একটি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার পূর্ণ বিকাশ অর্জনে সহায়তা করে। জন্ম থেকে প্রথম তিন বছর পর্যন্ত ভালো এবং স্বাস্থ্যকর পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার একটি শিশুর সুন্দর ও উজ্জ্বল বৃদ্ধির ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।