শিশুর খাবারে অরুচির কারণ ও প্রতিকার

0
Health

শিশুর খাবারে অরুচি খুবই পরিচিত স্বাস্থ্য সমস্যা। বাবা-মা থেকে শুরু করে পরিবারের সবাই শিশুর রুচি নিয়ে চিন্তিত থাকেন। প্রায় সব বাবা-মায়েরই অভিযোগ, শিশু ঠিকমতো খেতে চায় না। শিশুর রুচি কমে যাওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। শিশুর স্বাভাবিক শারীরিক বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টির প্রয়োজন। আর এ জন্য শিশুর রুচির বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

বাবা-মায়ের ভূমিকা : শিশুকে খাওয়ানোর ব্যাপারে বাবা-মায়ের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। খাওয়ানোর সময় শিশুর সঙ্গে সংবেদনশীল আচরণ করতে হবে। খাবারকে শিশুর কাছে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করতে হবে। শিশুর খিদে না থাকলেও তাকে জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করা অনুচিত এতে রুচি কমে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, জোর করার কারণে খাবারের প্রতি শিশুর মনে ভয় ও অনীহা জন্ম নেয়। তাই জোর না করে নিয়মমতো খাওয়ার ব্যাপারে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে।

 

শিশুকে সময় কম দেওয়া : শিশুর প্রতি বাবা-মায়ের মনোযোগ কমে গেলেও সে খাওয়া কমিয়ে দিতে পারে। ব্যস্ততার কারণে অনেকে হয়তো শিশুকে ঠিকমতো সময় দিতে পারেন না। শিশুর যত-পরিচর্যা কম হয়। এতে করে বাচ্চার রুচি কমে যায়, শিশুর বিকাশে বিরূপ প্রভাব ফেলে।

 

মানসিক চাপ : শিশুর যদি রুচি কমে যায়, ঘুম কম হয় এবং সব সময় তাকে বিরক্ত মনে হয়, তবে বুঝতে হবে কোনো কারণে শিশুটি মানসিক চাপে ভুগছে। মানসিক চাপ শিশুর রুচি কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। এ সময় শিশুকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। মানসিক চাপ কমিয়ে তাকে হাসিখুশি রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। সাধারণত শিশুরা ভয় পেলে, একাকী থাকলে কিংবা বাবা-মায়ের কাছ থেকে কম সময় পেলে মানসিক চাপে ভোগে।

 

শারীরিক অসুস্থতা : শারীরিক অসুস্থতার কারণে শিশুর খাওয়ার রুচি কমে যায়। সাধারণত জ্বর, গলা ব্যথা, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ, কিংবা ডায়রিয়া হলে শিশুর খাবারের পরিমাণ কমে যায়। সাধারণত সুস্থ হয়ে উঠলেই বেশিরভাগ শিশুর রুচি ঠিক হয়ে যায়। শিশুর শারীরিক অসুস্থতার সময় খাবারের বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। এ সময় শিশুকে অল্প-অল্প করে বারবার খাওয়াতে হবে। পাশাপাশি দ্রুত সুস্থতার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ মতো চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

 

কৃমির সংক্রমণ : কৃমির সংক্রমণ শিশুদের শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলে। কৃমি শিশুর পরিপাকতন্ত্রে প্রবেশ করে সেখানে পরজীবী হিসেবে অবস্থান করে। এর ফলে শিশুর নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ে। রুচিও কমে যায়। কৃমির সংক্রমণ হলে শিশুকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী

কৃমির ওষুধ খাওয়াতে হবে।

 

রক্তশূন্যতা : রক্তশূন্যতা রুচি কমে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। রক্তশূন্যতায় ভোগা শিশুরা অন্য শিশুদের তুলনায় দুর্বল ও ক্লান্ত থাকে। এরা বেশিরভাগ সময়ই বিরক্ত থাকে এবং প্রায়ই কান্নাকাটি করে। সময়মতো রক্তশূন্যতার চিকিৎসা না করালে এসব শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।

 

এসব কিছুর পাশাপাশি শিশু ঠিকমতো বেড়ে উঠছে কি না সেদিকেও নজর রাখতে হবে। যদি দেখা যায় যে, শিশু সমবয়সীদের মতোই বাড়ছে এবং তার ওজনও ঠিক আছে তাহলে বুঝতে হবে তার শরীরে পুষ্টির কোনো ঘাটতি নেই। অর্থাৎ আপনার শিশুর খাওয়া-দাওয়া স্বাভাবিক আছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *